৩০ বছরেও আমতলীতে দেওয়ানী আদালত পুণঃস্থাপন হয়নি; চরম ভোগান্তি | আপন নিউজ

সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ১০:১৫ পূর্বাহ্ন

প্রধান সংবাদ
কলাপাড়ায় গরুতে ঘাস খাওয়া নিয়ে দ্বন্দ্ব; দুজনকে কু’পি’য়ে জ’খ’ম করার অভিযোগ। কলাপাড়ায় প্রান্তিক কৃষকের মাঝে রাসায়নিক সার ও বীজ বিতরণ আমতলীতে হতদরিদ্র পেল উপহারের ঘর কলাপাড়ায় তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে বিশুদ্ধ পানি ও স্যালাইন বিতরণ কলাপাড়ায় পানিতে ডুবে দুই শি’শু’র মৃ’ত্যু ’উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হবে ভয় ভীতিহীন, স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর নির্বাচন’ -দুর্যোগ ও ত্রান প্রতিমন্ত্রী কলাপাড়ায় মাছ লু’টে বা-ধা: দূর্বৃত্তদের হা’ম’লা’য় ঘের মালিকের ছেলে গু’রু’তর জ’খ’ম আমতলীতে সাংসদের উদ্যোগে তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে খাবার স্যালাইন ও সুপেয় পানি বিতরন আমতলীতে রাজহাঁস নিয়ে দুই পক্ষের সং’ঘ’র্ষে আ’হ’ত-৯ মানুষের কৃতকর্মে বিষাক্ত হয়ে উঠছে পৃথিবী
৩০ বছরেও আমতলীতে দেওয়ানী আদালত পুণঃস্থাপন হয়নি; চরম ভোগান্তি

৩০ বছরেও আমতলীতে দেওয়ানী আদালত পুণঃস্থাপন হয়নি; চরম ভোগান্তি

৩০ বছরেও আমতলীতে দেওয়ানী আদালত পুণঃস্থাপন হয়নি; চরম ভোগান্তি

আমতলী প্রতিনিধিঃ ৩০ বছরেও আমতলীতে দেওয়ানী আদালত পুণঃস্থাপন হয়নি। চরম ভোগান্তিতে পরেছে আমতলী-তালতলী উপজেলার মামলা-মোকোদ্দমার সাথে জড়িত লক্ষাধীক মানুষ। চার কিলোমিটার প্রমত্তা পায়রা (বুড়িশ্ব) নদী পাড়ি দিয়ে মামলা- মোকোদ্দমার জন্য যেতে হয় বরগুনা জেলা শহরে অবস্থিত সহকারী জজ আদালতে। এতে দারুনভাবে উপেক্ষিত হচ্ছে জণস্বার্থ। ২০১২ বরগুনা জেলা জজ আমতলীতে দেওয়ানী আদালত পুনঃস্থাপনের পক্ষে প্রতিবেদন দিলেও নয় বছরেও তা আলোরমুখ দেখেনি। এতে স্থবির হয়ে পরেছে আদালত পুনঃস্থাপনের কার্যক্রম। দ্রুত আমতলীতে দেওয়ানী আদালত পুনঃস্থাপনের দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।





জানাগেছে, ১৯৮২ সালে আমতলী-তালতলী নিয়ে আমতলী উপজেলা গঠিত হয়। উপজেলা ঘোষনা হওয়ার পর থেকেই আমতলীতে মুনসেফ (দেওয়ানী) আদালত স্থাপিত হয়। ওই সময় থেকে খুব ভালো ভাবেই চলে আসছিল আমতলীর আদালত। ১৯৯১ সালে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ফলে কোন কারন ছাড়াই আমতলী আদালত প্রত্যাহার করে বরগুনা জেলা শহরের সাথে সংযুক্ত করে তৎকালীন সরকার। এতে সুবিধা বি ত হয় দুই উপজেলার অন্তত লক্ষাধিক বিচারপ্রার্থী। মুনসেফ আদালত বরগুনায় সংযুক্ত হওয়ায় এক বছরের মাথায় ১৯৯২ সালে পায়রা নদী ও রাখাইন অধ্যুাসিত এলাকা বিবেচনা করে ফৌজদারী আদালত পুনরায় আমতলীতে শুরু হয়। কিন্তু গত ৩০ বছরেও দেওয়ানী আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়নি। বন্যা-জলোচ্ছাস উপেক্ষা করে চার কিলোমিটার প্রমত্তা পায়রা নদী পাড়ি দিয়ে দুই উপজেলার মানুষের বরগুনা জেলা সদরে সহকারী জজ আদালতে মামলা করতে যেতে হয়। এতে মামলা-মোকোদ্দমার সাথে সংশ্লিষ্ট প্রত্যান্ত গ্রামা লের হাজার হাজার বিচার প্রার্থীরা চরমভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। বরগুনা জেলা সদরে দেওয়ানী আদালত থাকায় দু’উপজেলার জণস্বার্থ চরমভাবে উপেক্ষিত হচ্ছে বলে দাবী করেন আমতলী মানবধিকার কমিশনের সভাপতি অশোক মজুমদার। দেওয়ানী আদালত পুনঃস্থাপনের দাবীতে ইতিমধ্যে আমতলী উপজেলা আইনজীবি সমিতি আইন মন্ত্রনালয়ে আবেদন করেছেন। বর্তমানে বরগুনা দেওয়ানী আদালতে আমতলী-তালতলীর প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মামলা চলমান রয়েছে। এদিকে ২০১২ সালে তৎকালিন আইন প্রতিমন্ত্রী এ্যাড. কামরুল ইসলাম আমতলী আদালত পরিদর্শনে আসেন। তিনি আদালত পরিদর্শন শেষে দেওয়ানী আদালত পুণঃস্থাপনের আশ্বাস দিয়ে বরগুনা জেলা জজের কাছে প্রতিবেদন চান। তৎকালিন জেলা জজ আমতলীতে দেওয়ানী আদালত পুনঃস্থাপনের পক্ষে প্রতিবেদন দেন এমন দাবী আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) বরগুনা জেলা আইনজীবি সমিতির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট এমএ কাদের মিয়ার। কিন্তু প্রতিবেদন দাখিলের ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও আমতলীতে দেওয়ানী আদালত পুনঃস্থাপনের আলোর মুখ দেখেনি। স্থবির হয়ে পরে আদালত পুনঃস্থাপনের কার্যক্রম। ভুক্তভোগীরা দ্রæত আমতলীতে দেওয়ানী আদালত পূনঃস্থাপনের দাবী জানিয়েছেন।




তালতলী উপজেলা গাবতলী গ্রামের মোঃ আবদুল মাজেদ মাষ্টার বলেন, গত ১০ বছর ধরে বরগুনা সহকারী জজ দেওয়ানী আদালতে (আমতলী) একটি মামলা চলছে। ঝড় বন্যা উপেক্ষা করে চার কিলোমিটার পায়রা নদী পাড়ি দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বরগুনা আদালতে যেতে হয়। এটা যে কতটা কষ্টের তা বুঝাতে পারবো না। তিনি আরো বলেন, আমতলী-তালতলী মানুষের কষ্টের কথা বিবেচনা করে আইন মন্ত্রনালয়কে দ্রæত আমতলীতে দেওয়ানী আদালত স্থাপনের দাবী জানাই।
আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের সিনিয়র আইনজীবি মোঃ আওলাদ হোসেন আকন্দ বলেন,আমতলীতে দেওয়ানী আদালত না থাকায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মামলার বিচারপ্রার্থীদের বরগুনা আদালতে যেতে হচ্ছে। যা চরম দূর্ভোগের। দ্রæত দেওয়ানী আদালত পুনঃস্থাপনের দাবী জানাই। এতে মানুষের শারীরিক ও আর্থিক ভাবে ক্ষতি হচ্ছে।
বরগুনা আইনজীবি সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি সিনিয়র আইনজীবি এ্যাড. আবুল কাশেম মিয়া বলেন, ১৯৯১ সালে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ফলে আমতলী থেকে দেওয়ানী আদালত বরগুনা জেলা সদরের সাথে সংযুক্ত হয়। গত ৩০ বছর পেরিয়ে গেলেও দেওয়ানী আদালত আমতলীতে পুনঃস্থাপন হয়নি। এই ৩০ বছর ধরেই দুই উপজেলার হাজার হাজার মানুষ চরম কষ্টে মামলা পরিচালনা করছেন।
বরগুনা আইনজীবি সমিতির সহ-সভাপতি এ্যাড. এম এ কাদের মিয়া বলেন, মানুষের কষ্ট বিবেচনা করেই আমতলীতে দেওয়ানী আদালত পুনঃস্থাপনের চেষ্টা করে আসছি। ইতিমধ্যে আইন মন্ত্রনালয়ে আবেদন করেছি। তিনি আরো বলেন ২০১২ সালে তৎকালিন আইন প্রতিমন্ত্রী এ্যাড. কামরুল ইসলাম আমতলী আদালত পরিদর্শনে এসে আদালত পুনঃস্থাপনের জন্য বরগুনা জেলা জজকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। বরগুনা জেলা জজ আমতলীতে আদালত পুনঃস্থাপনের পক্ষে মত দেন। জেলা জজের দেয়া প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে জমা দেওয়া হলেও গত ৯ বছরেও ওই প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি। ফলে আমতলীতে দেওয়ানী আদালত পুনঃস্থাপনের কার্যক্রম স্থাবির হয়ে পড়ে আছে।
বরগুনা জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি মোঃ আব্দুর রহমান নান্টু বলেন, আমতলী দেওয়ানী আদালত পুনঃস্থাপনের জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই পদক্ষেপটি অজ্ঞাত কারনে থমকে আছে। তিনি আরো বলেন, দুই উপজেলার মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে দেওয়ানী আদালত আমতলীতে স্থাপন করা খুবই জরুরী।
বরগুনা আমতলী উপজেলার কৃর্তি সন্তান ঢাকা বার আইনজীবি সমিতির সাবেক সভাপতি এ্যাড. গাজী শাহ আলম বলেন, আমতলীতে দেওয়ানী আদালত পুনঃস্থাপন সময় যুগোপযোগী দাবী। মানুষের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে ওইখানে দেওয়ানী আদালত পুনঃস্থাপন করা প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, বন্যা জলোচ্ছাস উপেক্ষা করে পায়রা নদী পাড়ি দিয়ে আমতলী ও তালতলীর মানুষ বরগুনা জেলা শহরের আদালতে যেতে হয়। এটা অত্যান্ত কষ্টের। আইন মন্ত্রনালয়ের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আমতলীতে দেওয়ানী আদালত পুনঃস্থাপনের যৌক্তিকতা তুলে ধরেছি এবং যাতে দ্রæত আদালত পুণঃস্থাপন হয় সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু আমতলী উপজেলায় দেওয়ানী আদালত পুনঃস্থাপনের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে বলেন, লক্ষাধীক মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে দেওয়ানী আদালত পুনঃস্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রামণ কমে গেলেই কার্যক্রম শুরু করবো।

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com

Design By JPHostBD
error: সাইটের কোন তথ্য কপি করা নিষেধ!!